রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১২ অপরাহ্ন
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, কালের খবর :
সিদ্ধিরগঞ্জে বৃদ্ধা রহিমা বেগমের কোটি টাকার জমি বেদখল হয়ে গেছে। বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারে দপ্তরে দপ্তরে আবেদন করেও জমি উদ্ধার করতে পারছে না বৃদ্ধা রহিমা। বেদখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধার করতে না পেরে বৃদ্ধা রহিমা বেগম এখন শয্যাশায়ী। একটি ভূমিদস্যু চক্র রহিমার গোদনাইল মৌজাস্থিত পৈত্রিক ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্ত আরএস ৫টি দাগের কোটি টাকা মূল্যের ১৪ শতাংশ জমি জোর পূর্বক দেয়াল নির্মাণ করে দখলে নিয়েছে। এ ঘটনায় বৃদ্ধা রহিমা বেগম জমি দখলমুক্ত করতে এলাকায় কোন সুরানা না পেয়ে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার নারায়ণগঞ্জ বরাবরে আবেদন করেন।
জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল বাগপাড়া ভূইয়া বাড়ির মৃত ইয়ানুছ ভূইয়ার মেয়ে রহিমা বেগম (৬১) পৈত্রিক ওয়ারিশ সুত্রে প্রাপ্ত আর এস ১০৪৭, ১০৪৮, ১০৫০, ১২০৫ ও ১২০৭ দাগের জমি হতে বিভিন্ন পরিমানে মোট ১৪ শতাংশ জমি জোর পূর্বক দখলে নিয়ে দেয়াল নির্মাণ করে মৃত হাসমত আলীর ছেলে সাইজুদ্দিন। গত বছর বৃদ্ধা রহিমা বেগম তার স্বামীর সাথে পবিত্র হজ্জ্বব্রত পালন করতে সৌদি আরব গমন করেন।
তাদের অনুপস্থিতিতে সাইজুদ্দিন ও তার লোকজন বৃদ্ধা রহিমার ১৪ শতাংশ জমি ও জমির সাথে থাকা সরকারী হালট দখলে নিয়ে দেয়াল নির্মাণ করে। পবিত্র হজ্জ্ব পালন শেষে দেশে ফিরে বৃদ্ধা তার দখলীয় জমি উদ্ধারে স্থানীয় ভাবে দেন দরবার করে কোন উদ্ধার করতে পারেনি। বেদখল হওয়া ১৪ শতাংশ জমির বর্তমান বাজার মূল্য ১ কোটি টাকারও বেশি। কোটি টাকার জমি হারিয়ে বৃদ্ধা আজ শয্যাশায়ী। জমি উদ্ধারে কোন উপায়ন্তর না পেয়ে মঙ্গলবার দখলীয় জমি উদ্ধারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার বরাবরে এক লিখিত আবেদন করেন রহিমা বেগম।
রহিমা বেগম জানায়, সিএস ও এসএ ৪৪৩ নং দাগে সরকারী হালট রয়েছে। হালটের পর আর.এস ৫ টি দাগে ১৯ শতাংশ জমির মালিক রহিমা বেগম। সাইজুদ্দিন সিএস ৪৪৩ নং দাগের সরকারী হালট দখলের সাথে রহিমা বেগমের মালিকানাধীন আর এস ১০৪৭, ১০৪৮, ১০৪৯, ১০৫০ ও ১২০৭ দাগের ১৪ শতাংশ জমি জোর পূর্বক দখলে নিয়ে ৫টি কক্ষ, তেলের পাম্প হাউজ ও ট্যাঙ্কলরী স্ট্যান্ড নির্মাণ করে দখলে নিয়েছে। তিনি আরও জানান, পৈত্রিক ওয়ারিশ সুত্রে পাওয়া জমি থেকে সাইজুদ্দিন ১৪ শতাংশ জমি দেয়াল নির্মাণ করে তার দখলে রেখেছে যার মূল্য এক কোটি টাকা। জমির চিন্তায় বৃদ্ধা রহিমা এখন শয্যাশায়ী।
একটি সুত্র জানায়, একটি ভূমিদস্যু চক্র জালিয়াতি করে রহিমার জমি বেদখলে নিয়েছে। রহিমা বেগমের জমির উল্লেখিত দাগ বসিয়ে ওই চক্রটি সাইজুদ্দিনের পুত্র মারুফ পারভেজের নিকট আম-মোক্তার মূলে বিক্রয় করে যার দলিল নং- ৬০৯৩, তারিখঃ ১৬/১১/২০১৫ইং। এরপর মারুফ পারভেজ তারই পিতা সাইজুদ্দিনের নিকট আম-মোক্তার নানা দলিল মূলে উক্ত জমি দলিল নং- ৬৩৯৪, তারিখ- ০১/১২/২০১৫ইং মূলে সাফ বিক্রয় করে পিতা-পুত্র গংরা উক্ত জমি দখলে নিয়ে দেয়াল নির্মাণ করে ভোগ দখল করে আসছে। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে দুইটি দলিল সম্পন্ন করে ভূমিদস্যু চক্র বৃদ্ধার কোটি টাকা মূল্যের ১৪ শতাংশ জমি জোর পূর্বক দখলে নিয়েছে। জমির মালিকানা ছাড়াই কিভাবে জমি বিক্রি কিংবা রেজিষ্ট্রী করা হলো- এমন প্রশ্ন স্থানীয়দের মাঝে। এর সাথে স্থানীয় ভূমি অফিস কিংবা সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসের কোন অসাধু কর্মকর্তা জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখার দাবি এলাকাবাসীর।
জমি দখলের বিষয়ে সাইজুদ্দিন জানায়, রহিমা বেগমের কোন জমি আমার দখলে নেই। আমি মতিউর রহমান থেকে ক্রয় করা জমিতে দেয়াল নির্মাণ করে আমার ব্যবসা পরিচালনা করছি।